1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফুকুশিমার বর্ষপূর্তি

১০ মার্চ ২০১২

ফুকুশিমা বিপর্যয়ের এক বছর হয়ে গেল৷ জাপানের ৫৪টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রায় সব ক’টিকে সরবরাহ প্রণালী থেকে বিছিন্ন করে রাখা হয়েছে৷ কিন্তু জাপান পরমাণু জাত জ্বালানি শক্তি পরিত্যাগ করছে, এ’কথা বলা যায় না৷

https://p.dw.com/p/14Ip1
ছবি: AP

জাপানে যে ক'জন রাজনীতিক জ্বালানি নীতি পরিবর্তনের সপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন, তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে নাম করতে হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান'এর৷ ক্ষমতায় থাকাকালীনই তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, জাপানের জন্য একটি নতুন জ্বালানি নীতির খসড়া প্রস্তুত করা হোক:

‘‘বর্তমান জ্বালানি নীতি অনুযায়ী ২০৩০ সালেও ৫০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ আণবিক চুল্লি থেকে উৎপাদন করা হবে৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানি মাত্র ২০ শতাংশ সরবরাহ করবে৷ এই যোজনা সম্পূর্ণ নতুন করে ভেবে দেখা উচিৎ৷''

পদত্যাগ করার স্বল্প আগে কান নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো সংক্রান্ত আইনটি পাস করান৷ কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রণালীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি জাত বিদ্যুৎ প্রদানের জন্য যে দাম পাওয়া যাবে, তা ঠিক করার আজও কোনো ফর্মুলা নির্দ্দিষ্ট করা হয়নি৷ এখন শোনা যাচ্ছে, নতুন জ্বালানি নীতির খসড়া নাকি এ'বছরের মাঝামাঝি প্রস্তুত হবে৷

Buchcover 3/11 – Tagebuch nach Fukushima
বছর ঘুরে গেল ফুকুশিমা কান্ডের পর

ওদিকে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোদা ঘোষণা করেছেন বটে যে, তিনি কোনো নতুন আণবিক চুল্লি নির্মাণে আগ্রহী নন৷ কিন্তু তিনি যে সব আণবিক চুল্লি আছে, সেগুলি যথাশীঘ্র চালু করাটা প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন৷ তবে প্রথমে তথাকথিত ‘স্ট্রেস টেস্ট' বা ‘আপৎকালীন পরীক্ষা'-র মাধ্যমে সেগুলির নিরাপত্তা জনিত নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করে নিতে হবে৷

নোদা যাই বলুন, একটি অলিখিত আইন অনুযায়ী আণবিক চুল্লিগুলি আশেপাশের লোকালয়ের মানুষদের সম্মতি ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ শুরু করতে পারবে না৷ এবং ফুকুশিমার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থানীয় বাসিন্দাদের মনোভাব: ‘আমরা বহুদিন ধরে আণবিক চুল্লিগুলির সঙ্গে সহাবস্থান মেনে আসছি৷ কিন্তু ওগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া উচিৎ৷'

জাপানের মুখ্য রাজনৈতিক দলগুলি এ'বিষয়ে একমত যে, আপাতত আণবিক শক্তি ছাড়া কাজ চালানো সম্ভব নয়৷ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান'এর এখানে কিছু বলার অথবা করার নেই৷ অথচ আণবিক চুল্লিগুলি থেকে বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হওয়ার ফলে জাপানে যে কিছু বিদ্যুৎ সংকট সৃষ্টি হয়েছে, এমন নয়৷ চটজলদি পুরনো থার্মাল, অর্থাৎ কয়লা ইত্যাদি জ্বালানির চুল্লিগুলিকে আবার সক্রিয় করা হয়েছে৷

মুশকিল এই যে, বিদ্যুতের দাম এমনিতেই চড়া৷ কয়লা ও গ্যাসের খরচের ফলে সে দাম আরো চড়েছে৷ এছাড়া নাকি দীর্ঘমেয়াদি সূত্রেও পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ খনিজ জ্বালানি থেকে কমই থাকবে৷ পরিবেশ সংরক্ষণ সংগঠনগুলি অবশ্য সরকারের এ'সব হিসেব-নিকেশ মানতে রাজি নয়৷ এমনকি বিদ্যুতের দাম সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য হাজিমু ইয়ামানা স্বয়ং বলতে বাধ্য হয়েছেন:

‘‘বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা, রাজনীতিক আর বিজ্ঞানীদের এই ঘোঁট'কে জাপানে বলে গেনশিরিয়োকু মুরা, যার অর্থ আণবিক গ্রাম৷ এই গাঁয়ের মোড়লদের উপর জাপানের মানুষ আস্থা হারিয়েছে৷ তবুও জ্বালানি নীতি সংক্রান্ত পরিষদ ও প্রতিষ্ঠানগুলিতে আগে যারা ছিল, এখনও তারাই বিরাজ করছে৷ এবং তারা এই সম্ভাব্য ভূমিকম্পের দ্বীপরাজ্য জাপানে এখনও কিছু পরিমাণ আণবিক শক্তি জাত বিদ্যুতের প্রয়োজন দেখে৷''

প্রতিবেদন: পেটার কুইয়াথ / অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য