1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ : আশা আর শঙ্কা সমানে সমান

সমীর কুমার দে ঢাকা
৬ অক্টোবর ২০২৩

আইন করার ৫ বছর পর সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে৷ অপেক্ষার অবস্থানে নিঃসন্দেহে স্বস্তি অনেক৷

https://p.dw.com/p/4XCwm
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে বিধিমালা জারি হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে বিধিমালা জারি হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বরছবি: Al Mamun

তবে ক্ষতিপূরণে আবেদনের প্রক্রিয়া এত জটিল যে, প্রকৃত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাবেন কিনা তা নিয়ে থাকছে অনেক সংশয়৷

দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত ব্যক্তিদের সবার পক্ষে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হলে তা দেওয়ার সক্ষমতা আছে কিনা সেই প্রশ্নও থাকছে৷ সবচেয়ে বড় কথা- ক্ষতিপূরণের মামলাগুলো দিনের পর দিন ঝুলে থাকে এবং এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এমন নজির বাংলাদেশে নেই৷

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সড়ক পরিবহন আইন করে৷ এতে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়৷ তবে বিধিমালা করতেই পার হয়ে যায় অনেক সময়৷ বিধিমালা অনুসারে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেলে ভুক্তভোগী ব্যক্তির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে৷ আর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানি হলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি পাবেন তিন লাখ টাকা৷ আহত কারো চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা না থাকলে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে তিন লাখ টাকা৷ তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকলে পাবেন এক লাখ টাকা৷

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা রিসার্চ ইউনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "উদ্যোগটি ভালো, কিন্তু সাধারণ মানুষের পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে৷ আবার এখানে তহবিলে ঘাটতি আছে৷ আমরা বলেছিলাম, আহত ব্যক্তিরা যে হাসপাতালে ভর্তি হবে, সেই হাসপাতাল থেকেও যেন ওই ব্যক্তির পক্ষে আবেদন করতে পারে, সেটাও এখানে থাকা উচিত৷ তা না হলে গ্রামের অনেক মানুষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ এক মাসের মধ্যে আবেদন না-ও করতে পারেন৷ গ্রামের একজন মানুষের ঢাকায় এসে আবেদন করার যৌক্তিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ৷ এই বিষয়গুলো ভাবা উচিত ছিল৷ আর একটা বিষয়, সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের কোনো ডাটাবেজ নেই৷ সঠিক ডাটাবেজ না থাকায় যারা তদন্ত করবেন তারাও সংকটে পড়তে পারে৷ ফলে এটি জরুরি৷”

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত, নিহত ব্যক্তিদের সবাই যদি ক্ষতিপূরণ চায় তাহলে দেওয়ার সক্ষমতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নও উঠছে৷ দরিদ্র মানুষের পক্ষে আবেদন করে তার পেছনে লেগে থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা কঠিন হতে পারে৷

পাশাপাশি শত শত মানুষের আবেদন পর্যালোচনা করার মতো জনবল ও সক্ষমতা রয়েছে কিনা সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে৷

'সাধারণ মানুষের ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে'

দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের দাবি মীমাংসার জন্য রয়েছে ১২ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ড৷ বিআরটিএর চেয়ারম্যান পদাধিকারবলে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন৷ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও পরিবহণ খাতের মালিক-শ্রমিকেরা বোর্ডের সদস্য৷ একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিও রয়েছেন সদস্য হিসেবে৷ বোর্ডের জনবল নিয়োগের ক্ষমতা আছে৷ ৩৪ জনের জনবল কাঠামোর একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে৷ তবে তা এখনো অনুমোদিত হয়নি৷

সড়ক আইন অনুসারে, আর্থিক সহায়তা পেতে নির্ধারিত ফর্মেদুর্ঘটনার সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে৷ ফলে যেসব দুর্ঘটনার পর ৩০ দিন পেরিয়ে গেছে, সেগুলোতে আর আবেদনের সুযোগ নেই৷ 

আবেদন দাখিলের দিন থেকে ১০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন৷ এই কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রতিবেদন জমা দেবে৷ প্রতিবেদন দাখিলের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ড আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে ‘প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়' চেকের মাধ্যমে টাকা দেবে৷

নিরাপদ সড়ক চাই'র প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "উদ্যোগটি তো ভালো৷ আমরা তো দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিপূরণের কথা বলে আসছি৷ কিন্তু এই ট্রাস্টি বোর্ডে সরকারী কর্মকর্তা, পরিবহণ মালিক-শ্রমিক ছাড়া আর কাউকে রাখা হয়নি৷ আমরা সেখানে থাকলে তো কথা বলতে পারতাম৷ কিন্তু আমাদের কাউকেই রাখা হয়নি৷ তবে আমি বলবো, নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো, সেই প্রবাদের মতো অন্তত একটা উদ্যোগ তো শুরু হোক৷''

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট শিবালয় উপজেলায় নতুন চলচ্চিত্রের দৃশ্যায়নের নির্ধারিত স্থান দেখে মাইক্রোবাসে ঢাকায় ফেরার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন৷ ঘিওরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোকা এলাকায় তাদের মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহণের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়৷ ওই দিন ঘিওর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে বাসচালক জামির হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন৷ এর কিছুদিন পর তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ও মিশুক মুনীরের স্ত্রী মঞ্জুলী কাজী পৃথক দু'টি ক্ষতিপূরণের মামলা করেন৷

'আমাদের জীবনের দাম কী এত কম!'

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুর্ঘটনার মামলার রায়ে বাস চালক জামিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন৷ একই বছরের ডিসেম্বরে ক্যাথরিন মাসুদের মামলায় তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট৷ পরে মালিকপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সেই মামলা স্থগিত হয়৷ কিন্তু মঞ্জুলী কাজীর মামলা এখনও শুনানির পর্যায়ে রয়েছে৷ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও রায় হয়নি৷

মঞ্জুলী কাজী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমাদের স্বাক্ষীদের শুনানি কেবল শেষ হয়েছে৷ ওদের পক্ষের স্বাক্ষী এখন চলছে৷ কবে শেষ হবে আমি জানি না৷” নতুন আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমাদের জীবনের দাম কী এত কম? তা-ও তো ৫ লাখ পেলে হতো৷ কিন্তু আমাদের দেশে প্রশাসনের যে শাখা-প্রশাখা সেখানে একজনকে আবেদন করে টাকা পেতে হলে পুরোটাই খরচ করতে হবে৷ কেউ যদি পায়ও হয়ত ৫০ হাজার টাকা হাতে পেতে পারে৷ বাকি টাকা ওদের কমিশন হিসেবে দিয়ে দেওয়া লাগবে৷ ফলে সাধারণ মানুষ খুব বেশি উপকৃত হবে না৷”

ক্ষতিপূরণের অর্থ আসবে যেভাবে

বিআরটিএর হিসাব বলছে, ২০২২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৩৮ জন৷ আহত ৪ হাজার ৬৪৮ জন৷ এই হিসাবে বছরে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে লাগবে ২৩২ কোটি টাকা৷ আহত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দিলে ব্যয় হবে প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা৷ এর সঙ্গে যোগ হবে ট্রাস্টের খরচ৷ সব মিলিয়ে বছরে ৪০০ কোটি টাকার বেশি লাগবে৷

বেসরকারি হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি৷ বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সড়কে মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৭১৩ জনের৷ আহত হয়েছেন সাড়ে ১২ হাজারের বেশি মানুষ৷ বেসরকারি হিসাব আমলে নিলে বছরে ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজন হতে পারে ৮০০ কোটি টাকার মতো৷ অথচ সরকার এখন যে প্রক্রিয়ায় তহবিল গঠন করছে, তাতে বছরে দেড়শ' কোটি টাকার মতো সংগ্রহ করা হতে পারে৷

সড়ক পরিবহণ আইনে ক্ষতিপূরণের জন্য গঠিত তহবিলের টাকা আসার খাতগুলো হলো সরকারের দেওয়া অনুদান, মোটরযানের মালিকের কাছ থেকে তোলা চাঁদা, সড়ক পরিবহণ আইনের মাধ্যমে আদায় করা জরিমানার অর্থ, মালিক সমিতি থেকে দেওয়া অনুদান, শ্রমিক সংগঠন বা শ্রমিক ফেডারেশন থেকে দেওয়া অনুদান, অন্য কোনো বৈধ উৎস থেকে পাওয়া অর্থ৷ বিআরটিএ বলছে, এখন পর্যন্ত শুধু যানবাহনের মালিকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে৷ সরকার এখনও কোনো টাকা দেয়নি৷ এখন পর্যন্ত এই খাত থেকে তহবিলে জমা হয়েছে ৯৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা৷

ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মতো যথেষ্ট টাকার সংস্থান নেই৷ তাহলে সবাইকে কীভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে?  ট্রাস্টি বোর্ড ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এখনই তো সবাইকে একসঙ্গে টাকা দেওয়া লাগছে না৷ কেবল শুরু হচ্ছে, তহবিল আস্তে আস্তে বড় হবে৷ সরকারের কাছে টাকা চেয়েছি৷ আবার সড়ক আইনে মামলার ফলে যে জরিমানা আদায় হয়, সেটিও পাওয়ার চেষ্টা করছি৷ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সারা দেশে এর প্রচার বাড়বে৷ তখন সবাই ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে উৎসাহী হবে৷ পাশাপাশি ফান্ডেও টাকা বাড়বে৷”

ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে সংশয়

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এটা করা হয়েছে মূলত পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের জন্য৷ পরিবহণ মালিক শ্রমিক ছাড়া আর কেউ এখান থেকে ক্ষতিপূরণ নিতে পারবে না৷ অথচ এই ফান্ডে টাকা দিচ্ছে সবাই৷ এটা আসলে তাদের লুটপাটের একটা জায়গা হবে৷ আমরা যেটা বলেছিলাম, একজন মানুষ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তখনই তার টাকা দরকার৷ হাসপাতালের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে আহত ব্যক্তিকে আমরা টাকা দিতে বলেছিলাম৷ এখন যেটা করা হয়েছে, যদি তিনি পানও সেটা চিকিৎসার পর৷ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের মানুষ৷ ফলে তাদের সঠিক সময়ে টাকা দরকার৷”

তবে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "একটা ভালো উদ্যোগ নিলে সেটার বিরোধিতা করাই হচ্ছে আমাদের কাজ৷ এটা অবশ্যই একটা ভালো উদ্যোগ৷ কোনো সমস্যা থাকতে পারে, কাজ শুরু হোক, তারপর পর্যায়ক্রমে সেটার সমাধান করা যাবে৷ এখন কেন বিরোধিতা করতে হবে?”

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এটা তো আমাদের আন্দোলনের ফসল৷ কিন্তু আমরা যেভাবে চেয়েছি, সেভাবে হয়নি৷ এখন পরিবহণ সেক্টরের লুটপাটের একটা নতুন ক্ষেত্র হলো৷ কিছুদিন পর আমরা পত্রিকায় এমন খবর দেখবো৷ কারও পরিবারের কেউ মারা গেলে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানসহ একমাস শোকের মধ্যে থাকে পরিবারটি৷ ফলে গ্রামের একজন মানুষ এক 

মাসের মধ্যে ঢাকায় এসে কীভাবে আবেদন করবেন? আবার কুড়িগ্রামের একজন যদি চট্টগ্রামে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, তাহলে তার তদন্ত কোথায় হবে? কে করবে? এমন বহু প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই৷ জোড়াতালি দিয়ে এটা করা হচ্ছে, কয়েকদিন পর বন্ধ হয়ে যাবে৷ তবে ফান্ড সংগ্রহ তো আর বন্ধ হচ্ছে না, এটা ওরা লুটপাট করে খাবে, সেভাবেই করেছে৷ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সচেতন করার সরকারি উদ্যোগও নেই৷”

ক্ষতিপূরণে অগ্রাধিকার

বিআরটিএ বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে বিধিমালা জারি হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর৷ এরপর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৩১০টি৷ এর মধ্যে ৬৩টি আবেদনের অনুসন্ধানপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে৷ নিহত ৩৮ জনের পরিবার ও আহত ২৫ জন ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য বলে প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছে৷ গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত যেসব আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকেই আগামী ২২ অক্টোবরে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ বাকি যারা থাকবেন, তাদের পরে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন পড়েছিল ১৭৯টি৷ এর মধ্যে নিহত ৩৮ জনের পরিবার ও আহত ২৫ জনের বিষয়ে অনুসন্ধান শেষ করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷

প্রথম যাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিষয়টি কীভাবে নির্ধারিত হয়েছে জানতে চাইলে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইম্যান অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সর্বশেষ মিটিংয়ে আমি ছিলাম৷

সেখানে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তবে আমি বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম৷ সর্বশেষ সিদ্ধান্ত জানি না৷ তালিকা চূড়ান্ত হলে নিশ্চয় আমাদের জানাবে৷