1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘আমি বাবাকে ভালবাসি, মাকে ভালবাসি''

২৬ ডিসেম্বর ২০১১

২০০৪ সালের ২৬শে ডিসেম্বর ‘সুনামি’ আঘাত করেছিল ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ দশটি দেশ৷ মারা যায় লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ তাই আজ, হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের স্মরণ করতে অনেকেই জড়ো হয়েছেন আচেহ এবং ব্যাংককের সমুদ্রতীরে৷

https://p.dw.com/p/13ZOj
ARCHIV - Ein Tsunami zerstört am 29.12.2004 am Strand gelgene Bungalows auf der Insel Phi Phi in Thailand (Archivfoto vom 28.03.2005). Bei der furchtbaren Tsunami-Katastrophe von 2004 kommen am zweiten Weihnachtstag mehr als 230.000 Menschen ums Leben. Gewaltige Flutwellen verwüsten innerhalb weniger Stunden die Küsten des Indischen Ozeans. Auslöser ist ein schweres Erdbeben der Stärke 9,1 vor der Küste der indonesischen Insel Sumatra. Mindestens 1,5 Millionen Menschen werden obdachlos. Foto: EPA/ STRINGER (zu dpa-Paket: "Chronologie der Flutkatastrophe in Südasien 2004" vom 16.12.2009) +++(c) dpa - Bildfunk+++
২০০৪ সালের সুনামির ধ্বংসযজ্ঞের ছবিছবি: picture-alliance/dpa

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে জন্ম আলিয়া হোমায়রা'র৷ একটি হলুদ কাগজে সে লিখেছে, ‘‘আমি বাবাকে ভালবাসি, মাকে ভালবাসি, ভাই কিকিকে ভালবাসি, বোন ইচাকে ভালবাসি৷'' আলিয়ার এখন আট বছয় বয়স৷ অর্থাৎ সুনামি যাখন তার পরিবারের সবাইকে কেড়ে নিয়েছিল, তখন আলিয়ার বয়স ছিল মাত্র এক বছর৷

আলিয়াসহ আরো অনেক বাচ্চা মিলে সুনামি-র সাত বছর পালন করছে৷ সবাই একটি কাগজে ছোট করে তার পরিবারের উদ্দেশ্যে কিছু লিখেছে৷ ভালবাসার কথা, প্রিয়জনকে হারানোর কথা৷ প্রায় পাঁচ হাজার কাগজের ফুলের ওপর এসব লেখা হয়েছে৷ এই হলুদ রঙের কাগজের ফুলগুলো এসেছে জাপানের ‘কোবে' শহর থেকে৷ ১৬ বছর আগে কোবে শহরে আঘাত হেনেছিল ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প৷ প্রায় ছয় হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল তাতে৷ তবে যারা সেই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল, তাদেরই একজন লিখেছে, ‘‘চলো সবাই একসঙ্গে উঠে দাঁড়াই৷ সবাই সামনে এগিয়ে চলি৷''

আলিয়ার দেখাশোনা করে তার নানি৷ প্রতি বছর তারা আচেহ প্রদেশে আসে৷ মৃতদের স্মরাণ করতে ৷ কাঁদতে কাঁদতে আলিয়ার নানি জানান, ‘‘আমি এখানে আলিয়াকে নিয়ে আসি যাতে করে ও বাবা-মাকে ভুলে না যায়৷''

Village women from the Indian state of Tamil Nadu look at the Bay of Bengal as they sit on the Marina beach in Chennai, India, Sunday, Dec. 27, 2009. The devastating Dec. 26, 2004, tsunami struck a dozen countries including this beach around the Indian Ocean rim, leaving 230,000 people dead. (AP Photo/Bikas Das)
২০০৪ সালের সুনামির ধ্বংসযজ্ঞের স্মরণে সমবেত মানুষছবি: AP

শুধু আলিয়া নয়, আরো প্রায় কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে আচেহ শহরে৷ সবাই স্মরণ করছে তাদের প্রিয়জনদের, যাদের কেড়ে নিয়েছিল ২০০৪ সালের ভয়ঙ্কর সেই সুনামি৷ আত্মীয় স্বজনরা দাঁড়িয়েছে কবরের সামনে৷ এমন অসংখ্য গণকবর খোঁড়া হয়েছিল সুনামি'র পরপরই৷ সিরনের একটি গণকবরে বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমানকে একসঙ্গে কবর দেয়া হয়েছিল৷ ধর্ম তখন কোনো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি৷ তবে অনেক মুসলমান জড়ো হয়েছিল মসজিদে৷ মৃতদের রূহের মাগফেরাত কামনা করতে৷

সুনামি'র সাত বছর পালনের কয়েকদিন আগে আচেহ'এর একটি মেয়ে তার বাবা-মাকে খুঁজে পেয়েছে৷ মেরি ইয়োলান্ডার ওয়াতির বয়স যখন সাত বছর তখন সুনামি'এর আঘাতে সে হারিয়ে যায় তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে৷ তার বাবা-মা ধরে নিয়েছিল ওয়াতি মারা গেছে৷ কিন্তু হারিয়ে যাওয়া ওয়াতি এতোদিন ছিল আর এক মহিলার কাছে৷ সে ওয়াতি'কে দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষেও করাতো৷ এমনকি পরে সে ওয়াতি'কে বাড়ি থেকে বেরও করে দেয়৷ ওয়াতি হাঁটতে হাঁটতে আচেহ শহরে এসে পৌঁছায়৷ তখন ওয়াতি'কে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের মোড়লের দপ্তরে৷ ওয়াতি শুধু তার নানার নাম জানতো৷ ভদ্রলোকের নাম ইব্রাহিম৷ ইব্রাহিমকে খবর দেয়া হয়৷ সে এসে সনাক্ত করেন ওয়াতি'কে৷ জানান, ওয়াতি তাঁর হারিয়ে যাওয়া নাতনি৷ সাত বছর পর, অবশেষে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে আসে ওয়াতি৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য