জার্মান আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলে সম্প্রতি দৃক মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ এই চুক্তির আওতায় দৃকের তৈরি বাংলাদেশভিত্তিক বিভিন্ন ‘মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট’ ব্যবহার করবে ডয়চে ভেলে৷
জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম সম্মেলনের শেষদিন গত ১৯ জুন ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ ও দৃকের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়৷ মূলত বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন ভিডিও – যা সেখানকার মানুষের তৈরি – সেগুলো দৃকের কাছ থেকে নেবে ডয়চে ভেলে৷
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দৃকের প্রতিষ্ঠাতা ড. শহীদুল আলম বলেন, ‘‘ইউরোপে শহর এবং গ্রামের মধ্যে তেমন বিশেষ পার্থক্য না থাকলেও আমাদের দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ আমাদের মূলধারার গণমাধ্যম বিভিন্ন কারণে গ্রামাঞ্চলের সংবাদের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় না৷ অথচ সেখানেই আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের বসবাস৷''
শহীদুল বলেন, ‘‘দু'বছর আগে আমরা ‘মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম' বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করি৷ এই প্রশিক্ষণে গ্রহণকারীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেন৷ তাঁরা ‘আইপড টাচ' ব্যবহার করে ভিডিও এবং অডিও আকারে তাঁদের অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রস্তুত করেন৷ বর্তমানে আমাদের এরকম ৩৫ জন সংবাদদাতা রয়েছেন৷''
ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ এখন দৃকের সংবাদদাতাদের তৈরি এসব ভিডিও ব্যবহার করবে৷ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ‘মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট' বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর করে সন্তুষ্ট ডয়চে ভেলের এশিয়া বিভাগের প্রধান আলেকজান্ড্রার ফ্রয়েন্ড৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট যে দৃকের সঙ্গে আমাদের কর্মকাণ্ড শুরু হচ্ছে৷ আমাদের অধুনালুপ্ত রেডিও অনুষ্ঠানের শ্রোতাদের একটি বড় অংশ গ্রামাঞ্চলে ছিলেন৷ পরবর্তীতে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করি আমরা৷ এখন দৃকের প্রকল্পের মাধ্যমে আবারো গ্রামাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে একটি যোগসূত্র তৈরি সম্ভব হবে৷''
বাংলা বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ-র কথায়, ‘‘গত প্রায় এক বছর ধরে আলাপ-আলোচনা চলছিল৷ কথা হচ্ছিল, কীভাবে ওয়েবসাইটে আরো বেশি ‘লোকাল কন্টেন্ট' দিতে পারি আমরা৷ সেক্ষেত্রে দৃকের সঙ্গে এই চুক্তি একটা ‘মাইল ফলক' বটে৷ আশা করছি বিভিন্ন ইস্যু – তা জয়বায়ু পরিবর্তন হোক অথবা মানবাধিকার সংক্রান্ত – খুব শীঘ্রই আমরা ডিডাব্লিউ ওয়েবসাইটের পাতায় তুলে ধরতে পারবো৷ তাও আবার বাংলাদেশের একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে৷''
উল্লেখ্য, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ এপ্রিল৷ দীর্ঘদিন রেডিও অনুষ্ঠান প্রচারের পর বর্তমানে ওয়েবসাইট এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এই সম্প্রচার কেন্দ্রটি৷ অন্যদিকে, বাংলাদেশে ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন আনতে এবং এই দেশকে ইতিবাচকভাবে বর্হিবেশ্বে তুলে ধরতে ১৯৮৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে দৃক৷ আলোকচিত্র গ্রন্থাগার হিসেবে কাজ শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি এখন ছড়িয়ে গেছে বিভিন্ন দিকে৷