1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

Geboren 1989

গ্রেটা হামান/এসি৯ নভেম্বর ২০১৪

২৫ বছর আগে বার্লিন প্রাচীরের পতন ঘটেছে৷ পুনরেকত্রিত জার্মানি আজ এক হিসেবে প্রাপ্তবয়স্ক৷ পুনরেকত্রীকরণ যাবৎ একট গোটা প্রজন্ম বড় হয়ে উঠেছে, বিভক্ত জার্মানি যাদের কাছে শুধু ইতিহাস৷

https://p.dw.com/p/1DjGV
Kinderarmut in Deutschland
ছবি: picture-alliance/dpa

ইতিহাসের সন-তারিখ কোনোদিনই আমার ভালো মনে থাকে না, এক ১৯৮৯ সালটা বাদে৷ সে'বছর বার্লিন প্রাচীরের পতন ঘটে৷ আবার ঠিক সেই বছরেই আমার জন্ম৷ পূর্ব জার্মানির নাগরিকদের জন্য যখন প্রথমবার সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়, তখন আমার বয়স ছ'মাস৷ মা টেলিভিশনে সেই খবর দেখছিলেন আর আমি তাঁর কোলে শুয়ে ঘুমোচ্ছিলাম৷

বার্লিন প্রাচীরের সঙ্গে আমার প্রথম বাস্তব মোলাকাত পশ্চিমের রুর শিল্পাঞ্চলের রেকলিংহাউজেন শহরে - যেখানে আমি মানুষ হয়েছি৷ সেখানে কোন এক বসতবাড়ির বাগানে এক টুকরো ‘‘মাওয়ার'' বা দেওয়াল রাখা ছিল, আদত বার্লিন প্রাচীরের একটি অংশ, যা দেখে আমার মনে হয়েছিল: বাগানে ফুলের গাছ না লাগিয়ে পুরনো কংক্রিট রাখার অর্থ?

Greta Hamann
বার্লিন প্রাচীর পতনের সময় গ্রেটা হামানের বয়স ছিল ছয় মাসছবি: DW/Greta Hamann

‘‘প্রাচীর কি এখনও আছে?''

১৬ বছর বয়সে এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবে ব্রাজিলে গিয়েছিলাম৷ সেখানকার স্কুলে প্রথমদিনেই শুনতে হল: ‘‘প্রাচীর কি এখনও আছে?'' আর: ‘‘পূর্ব জার্মানিতে জীবনযাত্রা কি'রকম?'' আমি তো প্রথমে বুঝতেই পারিনি৷ যখন বুঝলাম, তখন বললাম: না, দেওয়ালটা আর নেই৷ পর্তুগিজ ভাষায় ওর চাইতে বেশি বলা আমার পক্ষে তখন সম্ভব ছিল না৷

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বান্ধবী যখন জানালেন যে, তিনি মেকলেনবুর্গ-ফোরপমার্ন থেকে এসেছেন, তখনও আমি প্রথমে খেয়াল করিনি যে, তিনি সাবেক পূর্ব জার্মানি থেকে আগত - কেননা আমার মাথায় পশ্চিম জার্মানি, পূর্ব জার্মানি, এ'সব বিভাজন ছিল না৷ ছিল শুধু একটাই দেশ, সেটা হলো জার্মানি৷

অজ্ঞানের অন্ধকার

‘‘দি সাইৎ'' সাপ্তাহিক পত্রিকার একটি সাম্প্রতিক প্রবন্ধ পর্যায়ের শীর্ষক হলো: ‘‘সব কিছু ঠিক আছে, এমন ভান কোরো না''৷ পর্যায়টিতে সাবেক পূর্ব জার্মানির তরুণ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাদের মতে পুনরেকত্রিত জার্মানিতে আজ অবধি কোন কোন জিনিস ঠিক নয়; ‘ওয়েসি', অর্থাৎ জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের আচরণে ঠিক কোন কোন বস্তু তাদের অপছন্দ৷ যেমন: পুবের মানুষ হয়তো ‘দেশে' যাচ্ছেন, অর্থাৎ সাবেক পূর্ব জার্মানির কোথাও ফিরছেন; পশ্চিমের বন্ধুদের কেউ ঠাট্টা করে বললেন: ‘অন্ধকার জার্মানিতে ফিরছিস?'

আরেকজনের মতে ‘ওয়েসি', অর্থাৎ পশ্চিমিরা উদ্ধত, পুবের সম্পর্কে কিছু না জেনেই তারা মনে করে, তারা অনেক জানে৷ আরেকজন বলছেন: পুনরেকত্রীকরণ তো একটা ওয়ান-ওয়ে স্ট্রিট, ‘‘পূর্ব জার্মানি কি কিছু দিতে পেরেছে? সামান্যই৷'' বার্লিন ফ্রি ইউনিভার্সিটি'র অধ্যাপক ক্লাউস শ্রোয়ডার সাবেক পূর্ব জার্মানি সংক্রান্ত গবেষণা সমিতির প্রধান৷ তিনি বলেন: ‘‘বহু পুবের মানুষ বলেন, পশ্চিমিরা - বিশেষ করে উত্তর রাইন পশ্চিম ফালিয়া রাজ্যের মানুষদের - পূর্ব জার্মানি, তার ইতিহাস অথবা সেখানকার মানুষদের কাহিনি সম্পর্কে কোনো আগ্রহ নেই৷'' এবং পরিস্থিতি সত্যিই তাই, বলে প্রফেসর শ্রোয়ডার'এর অভিমত৷ আমার মুশকিল: আমি আবার ঠিক ঐ উত্তর রাইন পশ্চিম ফালিয়া'র মানুষ কিনা!

তরুণ প্রজন্মের চোখে পুনরেকত্রীকরণ সফল

কোলোন রেলওয়ে স্টেশনের একটি স্ট্যান্ডে ‘‘নিয়ন'' পত্রিকাটি হাতে এলো৷ এ'টি হল জার্মানির তরুণ-তরুণীদের জন্য সবচেয়ে বড় পত্রিকা৷ ম্যাগাজিনের কভারেই ঝলকানো সব রঙে জানানো হয়েছে: ‘‘তরুণ-তরুণীদের ৭৮ শতাংশ প্রেমে বিশ্বাস করেন৷ ৫০ শতাংশের কাছে সামাজিক ন্যায় হলো রাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য৷ বিশ শতাংশ মহিলা ওয়াক্সিং করেন৷ এই হলাম আমরা!'' পত্রিকাটি ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এক হাজার তরুণ-তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷

জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ সম্পর্কেও৷ আজ মাত্র ১৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে, জার্মানির পূর্বাঞ্চল আর পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য আছে - ২০০৫ সালে এই অভিমত ছিল ২৮ শতাংশের৷ ৪৭ শতাংশের কাছে পুনরেকত্রীকরণ পুরোপুরি সফল, ২০০৮ সালে যে অভিমত ছিল মাত্র ১৪ শতাংশের৷ আর পুনরেকত্রীকরণ ব্যর্থ হয়েছে, একথা আজ ভাবেন মাত্র চার শতাংশ৷

কে জানে, একদিন হয়তো আমরা পুব আর পশ্চিমের মধ্যে এককালের ভুল-বোঝাবুঝি নিয়ে হাসাহাসি করব!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য