1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কিছু বলুন শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া!

আশীষ চক্রবর্ত্তী১৮ এপ্রিল ২০১৫

তেঁতুল তত্ত্বের পক্ষে বলার লোক আছে, নির্বাচন কমিশনের মুলা, শিল-পাটা, ভ্যানিটি ব্যাগ, বৈয়ামের পক্ষের লোকেরও হয়তো অভাব হবেনা৷ ‘তেঁতুল' আর ‘বৈয়াম' কি এখনো বেশির ভাগ পুরুষেরই মনোজগত জুড়ে?

https://p.dw.com/p/1F9UL
Kombobild Khaleda Zia und Sheikh Hasina
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY

‘তেঁতুল তত্ত্বের' প্রবক্তা আহমদ শফির কথা আবার মনে পড়ে গেল৷ হেফাজতে ইসলামের আমির সেই যে বলেছিলেন, ‘‘নারী হচ্ছে তেঁতুলের মতো৷...মেয়েদের দেখলে পুরুষের লালা ঝরে৷ কোনো পুরুষের যদি লালা না ঝরে তাহলে বুঝতে হবে সে পুরুষত্বহীন৷... নারীরা চাকরি করতে পারবে না, গার্মেন্টসে কাজ করতে পারবে না৷...'' চট্টগ্রামের এক ওয়াজ মেহফিলে কথাগুলো বলেছিলেন আহমাদ শফি৷ ভিডিও ইউটিউবে চলে আসার পরে কী কী হয়েছিল তা আশা করি সবার মনে আছে৷

এখনো যদি ‘তেঁতুল তত্ত্ব' নিয়ে কথা শুরু হয় পক্ষে' যুক্তি দেখানোর লোক নিশ্চয়ই অনেক পাওয়া যাবে৷ তাঁদের কেউ কেউ এ তত্বের সমালোচনাকারীদের ‘নাস্তিক' বলে ফেসবুকে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করবেন৷ আরেক শ্রেণির আলোচক বলবেন, ‘‘ও কিছুনা৷ গণমাধ্যম শুধু শুধু সামান্য একটা বিষয়কে বড় ইস্যু বানাচ্ছে৷''

নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে নারী প্রার্থীদের কেটলি, গ্লাস, পান পাতা, টিস্যু বক্স, বৈয়াম, মুলা, মোড়া, শিল পাটা, ঝুমঝুমি, দোলনা, প্রেসার কুকার, ফ্রাইং প্যান, ভ্যানিটি ব্যাগ দেয়ার বিষয়টিকে তো বেশির ভাগ মানুষ ছোট করেই দেখছেন৷ নইলে শুধু সংবাদ মাধ্যমে দু-এক কলাম লেখা আর দু-চার মিনিট কথা বলার মধ্যে বিষয়টি আটকে থাকে?

Deutsche Welle DW Arun Chowdhury
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

নারীর ক্ষমতায়নের বিরোধীরা যতটা সক্রিয় এবং দৃশ্যমান, বাকিদের নিস্পৃহতা, নীরবতা এবং ক্ষেত্রবিশেষে সুবিধাবাদিতা ততটাই প্রকট৷ ‘তেঁতুল তত্ত্বের' উল্টোরথে তো দেখছি নির্বাচন কমিশনও চড়ে বসেছে! নইলে নারীকে বেছে বেছে কেটলি, গ্লাস, পান, মুলা, মোড়া, শিল পাটা, ঝুমঝুমি, দোলনা, প্রেসার কুকার, ফ্রাইং প্যান, ভ্যানিটি ব্যাগ বা বৈয়াম দেয়া কেন?

এর খুব দায়সারা একটা জবাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ বলা হয়েছে,‘‘এমন প্রতীক দেয়ার পেছনে নারীকে ছোট করে দেখার বিষয় ছিল না৷ তবে অভিযোগ এলে পরবর্তীতে আমরা এ ধরনের প্রতীক দেবো না৷'' তাদের দাবি ঠিক ধরে নিলেও, অর্থাৎ প্রতীক ঠিক করার সময় নারীকে ছোট করে দেখার বিষয়টি ভাবনায় না থাকলেও আসলে তো তেমন দৃষ্টিভঙ্গিই প্রকাশ পেয়েছে৷ এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর জন্য কারো অভিযোগের দরকার হবে কেন? নির্বাচন কমিশন কি নিজে থেকে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিতে পারেনা?

নারী অধিকার কর্মীরা সমস্বরে কেন এই প্রশ্ন তুলছেনা? আরেকটি বিষয়ও খুব ভাবাচ্ছে৷ দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দুই নারী শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার এত বিষয়ে এত মতবিরোধ, কিন্তু এই বিষয়ে যেন তাঁরা সহাবস্থানে৷ দুজনই চুপ৷ কেন? নারীর এই ‘অসম্মান'-কে কি তাঁরাও ‘সামান্য বিষয়' ভাবছেন? তাঁদের নীরবতা, নিষ্ক্রিয়তার কারণে আপাত সামান্য বিষয়টি কিন্তু দ্রুত অসামান্য হয়ে উঠতে পারে৷ নারীকে কেটলি, গ্লাস, পান, মুলা, মোড়া, শিল পাটা, বৈয়াম ইত্যাদি দেয়ার বিরুদ্ধে নারী হিসেবেও অন্তত একটা কিছু বলুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা! একটা কিছু বলুন মাননীয় বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য