1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেয়েদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লংঘন

মারিনা জোয়ারদার১০ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গেছে, সারা বিশ্বে প্রায় তেরো কোটি মেয়ের ওপর এফজিএম চালানো হয় বা তাদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ করা হয়৷ এবং প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ মেয়ে সম্মুখীন হচ্ছে এই বিপর্যয়ের৷

https://p.dw.com/p/Gr6X
সোমালিয়ার জোরপূর্বক মেয়েদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ (ফাইল ফটো)৷

অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর উপায়ে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে খর্ব করা হচ্ছে মানবাধিকার৷ লংঘিত হচ্ছে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার৷ বেশ কয়েক ভাবেই এই এফজিএম অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে৷ মূল উদ্দেশ্য হল, মেয়েটি যেন কোনভাবেই সহবাস উপভোগ করতে না পারে, তাদের ভাষায় সতীত্ব রক্ষা করা৷

এফজিএম যে বা যারা করে থাকে তারা অত্যন্ত অনভিজ্ঞ৷ এ ব্যাপারে চিকিৎসা জ্ঞান তাদের নেই৷ কোন ধরনের অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়াই এই অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে৷ যে কোন ধরনের এফজিএম-এই শারীরের মারাত্মক ক্ষতি হয় এবং একবার তা হলে শরীরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব৷ এর ফলে মেয়েটি বিভিন্ন ধরনের হীনমন্যতায় ভোগে, শারীরিকভাবে যে ক্ষতি হয় তা চূড়ান্ত রূপ নেয় গর্ভাবস্থায়৷ ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷

Somalische Frauen eröffnen Kampagne gegen Mädchenbeschneidung
এফজিএম বা মেয়েদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন (ফাইল ফটো)৷ছবি: picture-alliance / dpa/dpaweb

এফজিএম আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় ২৮টি দেশে প্রচলিত এক প্রথা৷ এছাড়া বেশ কিছু আরব দেশ সহ এশিয়ার কিছু কিছু দেশে মেয়েদের ওপর এফজিএম করা হয়ে থাকে৷ যে দেশগুলোতে এই ভয়াবহ প্রথা প্রচলিত, সেখানে মেয়েদের ওপর জোর করে তা করা হয়, সমাজে তাদের ছোট করে রাখাই মূল উদ্দেশ্য৷ সাধারণত ৪ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদের ওপর এফজিএম করা হয়ে থাকে৷ তবে কোন কোন ক্ষেত্রে বয়স আরো কম হতে পারে৷ বিয়ের আগে বা প্রথম সন্তান জন্মের ঠিক আগেও কখনো কখনো মেয়েদের ওপর এফজিএম প্রয়োগ করা হয়৷

আফ্রিকার বেসরকারী এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মানবাধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছে এফজিএম রোধ করার, অস্বাস্থ্যকর এই অস্ত্রোপচারটিকে পুরোপুরি নির্মূল করার৷ এদের সঙ্গে রয়েছে জার্মানির উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রণালয়৷ ঐ মন্ত্রণালয় ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন বন্ধ করতে হাতে নিয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প৷ যে সব দেশে এই প্রকল্প অনুযায়ী কাজ হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে বুরকিনা ফাসো, বেনিন, চাদ, ইথিওপিয়া, গিনি, মালি, কেনিয়া এবং সেনেগাল৷ এসব প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল সাধারণ মানুষকে এফজিএম এর বিষয়ে সতর্ক করা, তার ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা দেয়া যেন তারা নিজেরাই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে৷

চিন্তার বিষয় হল জার্মানির মত দেশেও গোপনে চালানো হচ্ছে এফজিএম৷ জার্মানিতে বসবাস করছে, এইরকম প্রায় ৩০ হাজার মেয়ের ওপর এফজিএম চালানো হয়েছে বা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে৷ জার্মানির উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রনালয় এফজিএম নির্মূল করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর এবং তা রোধ করতে প্রয়োজনীয় যে কোন ধরনের সাহায্য বা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ যে সব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে এফজিএম এর পর শারীরিক যে ক্ষতির সম্মুখীন মেয়েরা হয়ে থাকে তা সরাসরি তুলে ধরা, মানসিকভাবে যে বিপর্যয়ের মুখে তারা পড়ছে তা উন্মোচন করা৷ এর ফলেই আশা করা হচ্ছে যে, হয়তো এফজিএম বন্ধ করা, নির্মূল করা সম্ভব হবে৷

এ কারণেই প্রতি বছর ৬ই ফেব্রুয়ারী এফজিএম বন্ধ করতে পালন করা হয় ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ জিরো টলারেন্স অফ ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন, অর্থাৎ মেয়েদের ওপর অমানবিক আচরণ রোধ করতেই হবে, তা যেভাবেই হোক না কেন৷