1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টারনেটে ছবি শেয়ারের নতুন ধারা মুঠোফোন

২৭ ডিসেম্বর ২০১০

ইন্টারনেটে ছবি শেয়ার করার ধারা খুব দ্রুতই বদলাতে শুরু করেছে৷ একসময় ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে কম্পিউটারের মাধ্যমে ছবি শেয়ার করা হতো ইন্টারনেটে৷ এখন সরাসরি মুঠোফোন দিয়েই তা সম্ভব৷

https://p.dw.com/p/zq8N
স্মার্টফোনের সঙ্গে যেসব ক্যামেরা রয়েছে - তা বেশ শক্তিশালীছবি: dapd

ইন্টারনেটে ছবি আদান-প্রদানের চর্চাটা নতুন নয়৷ ২০০০ সালের শুরুতে ইন্টারনেটে ছবি শেয়ারিং- এ গতি আনে ফ্লিকার৷ সঙ্গে যোগ হয় পিকাসাসহ গুটিকয়েক ছবি নির্ভর ওয়েবসাইট৷ ইন্টারনেটে ছবি শেয়ারের সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে৷ তবে ক্রমশই তা মুঠোফোন নির্ভর হয়ে উঠছে৷

মুঠোফোনের যুগ

এইতো কিছুদিন আগেও মুঠোফোনে ছবি তোলা নিয়ে বিরক্ত হতেন অনেকে৷ ছবির কোয়ালিটি ভালো হতো না, তাই সেগুলো ইন্টারনেটে ছাড়াও হয়ে উঠতো না৷ ২০১০ সালে এসে কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে৷ এখন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়ছে৷ এই ফোনের সঙ্গে যেসব ক্যামেরা রয়েছে তা বেশ শক্তিশালী৷ যে কারণে ভালোমানের ছবি তোলা এখন যে কারো জন্যই সহজলভ্য৷

কিন্তু শুধু ছবি তুললে তো হবে না, এই ছবি যে অন্যকে দেখানোও চাই৷ ব্যবহারকারীর এই দিকটা বিবেচনা করেই ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা চালু করছেন নতুন ধারা৷ তৈরি হচ্ছে পিকপ্লিজ, ইন্সটাগ্রামের মতো ফটো অ্যাপ্লিকেশন৷ এসব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে মুঠোফোন থেকে সহজেই ইন্টারনেটে ছবি ছড়ানো যাবে৷

কেন এত শেয়ারিং?

কিন্তু এই যে ইন্টারনেটে এত ছবি শেয়ার করা৷ এটা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে দিনে দিনে? জানতে চেয়েছিলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর ফটো সাংবাদিক মুস্তাফিজ মামুনের কাছে৷ তিনি বলেন, মানুষ এখন অন্যকে নিজের ছবি আরো বেশি দেখাতে চাই৷ তাই ফেসবুকের মতো সাইটগুলোতে নিত্য নতুন অ্যালবাম তৈরি করে৷

Microsoft, CeBIT
আজকাল ইন্টারনেট নির্ভর সামাজিক যোগাযোগ হয়ে পড়ছে ছবিভিত্তিকছবি: AP

মুস্তাফিজ মামুন মনে করেন, ইন্টারনেটে ছবি শেয়ার করে ফটোসাংবাদিকরাও বেশ লাভবান হচ্ছেন৷ কেননা, ভালো মানের এবং গুরুত্বপূর্ণ ছবি কোন সাংবাদিকের কাছে পাওয়া যাবে, এটা জানাটা বেশ সহজ হচ্ছে ফেসবুকের কারণেই৷

ছবি শেয়ারের তিন ধারা

সে যাই হোক, ছবি শেয়ারের এই ধারাকে বিশেষজ্ঞরা ভাগ করছেন তিনভাবে৷ প্রথমটা তো বললামই, ফ্লিকারের যুগ৷ ২০০৬ নাগাদ এসে ছবি শেয়ারের এই ধারা চলে যায় সামাজিক নেটওয়ার্কে৷ তখন ফেসবুক ইন্টারনেটে ছবি আদান-প্রদানে এক নতুন ধারা যোগ করে৷ ২০০৮ সালে ইন্টারনেটকে ব্যক্তিগত ছবির রাজ্যে পরিণত করতে হাজির হয় টুইটপিক৷

ফেসবুকে গড়ে ১০ কোট ছবি

এই মুহূর্তে অনলাইনে প্রতিদিন কি পরিমাণ ছবি শেয়ার করা হয় তাঁর একটা পরিসংখ্যান দেওয়া যাক৷ ফেসবুকের হিসেবে প্রতিদিন সংস্থাটির ওয়েবসাইটে যোগ হচ্ছে ১০ কোটি ছবি৷ অবস্থা এমন যে, ফেসবুকের চেহারাই পাল্টে দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান মার্ক জুকারবার্গ৷ প্রোফাইলের নতুন এই চেহারায় ছবিটাই প্রাধান্য পেয়েছে বেশি৷

ফেসবুক ছাড়াও পাথ নামে আরেকটি ওয়েবসাইট চালু হয়েছে, যাদের বাণিজ্য শুধুই ছবিকেন্দ্রিক৷ হুড়হুড়িয়ে বাড়ছে এর ব্যবহারকারী৷ অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে ছবি শেয়ার নতুন সংযোজন ইন্সটাগ্রাম৷ মাত্র দু'মাস আগে বাজারে আসে এটি৷ প্রথম সপ্তাহে এই অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহারকারী পৌঁছায় এক লাখে৷ বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে দু'টো থেকে তিন'টি ছবি ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যোগ হচ্ছে৷

এভাবেই ইন্টারনেট নির্ভর সামাজিক যোগাযোগ হয়ে পড়ছে ছবিভিত্তিক৷ আর এই কাজটাকেই সহজ করে দিচ্ছে হালের মুঠোফোন৷ তবে, বিপত্তি কিন্তু এখানেও আছে৷ অনেকে একান্ত ব্যক্তিগত ছবিও ইন্টারনেটে দিয়ে দিচ্ছেন৷ যা পরবর্তীতে সেই ব্যক্তির জন্য বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়৷ মুঠোফোনে নতুন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে গিয়েও অনেকে না জেনে এই কাজ করছেন৷ তাই, ছবি শেয়ারের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের আগে সেটিকে ভালো করে বুঝে নিন৷ কেননা, একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিজেদের মধ্যেই থাকা ভালো৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক