বেন আলি সৌদি আরবে, টিউনিশিয়ায় নৈরাজ্য
১৫ জানুয়ারি ২০১১সৌদি রাজপ্রাসাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে ‘‘ভ্রাতৃসুলভ'' টিউনিশীয় জনগণ, এবং এই ‘‘বিশেষ পরিস্থিতিতে'' তাদের দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগ থেকেই বেন আলি এবং তাঁর পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হল৷ আরব বিশ্বে বেন আলিই তো একক প্রবীণ শাসক নন৷ অপরদিকে এই প্রথম একজন আরব নেতাকে জনতার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে পড়ে পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করতে হল৷ জর্ডানে বিক্ষোভ খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে৷ মিশরের কায়রোয় মানুষেরা টিউনিশিয়ার দূতাবাসের দিকে মিছিল করে গেছে, ধ্বনি দিয়েছে, মিশরীরাও এবার টিউনিশীয়দের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করো৷ টিউনিশিয়ায় যেন একটা গভীর রাজনৈতিক ভূমিকম্প ঘটেছে, যার কম্পন অনুভূত হচ্ছে আরব বিশ্বের সর্বত্র৷
ওদিকে পশ্চিমী বিশ্ব টিউনিশিয়ায় গণতন্ত্রের সম্ভাবনা দেখছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টিউনিশিয়ার বিক্ষোভকারীদের ‘‘সাহস'' এবং ‘‘মর্যাদার'' প্রশংসা করেছেন, ‘‘অদূর ভবিষ্যতে মুক্ত এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের'' ডাক দিয়েছেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নও টিউনিশীয় জনগণ ও তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতি সমর্থন ও স্বীকৃতি ব্যক্ত করেছে৷
অপরদিকে রাজধানী টিউনিসের মুখ্য রেলওয়ে স্টেশনটিতে আগুন জ্বলছে৷ শুক্রবার সন্ধ্যাতেই শহরের কেন্দ্র থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়৷ লুটতরাজ চলেছে, একাধিক সুপারমার্কেটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আকাশে হেলিকপ্টার ঘুরছে সার্চলাইট সহ৷ অধিবাসীরা আতঙ্কের মধ্যে প্রহর গুণছেন৷ শ্রমিক শ্রেণী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে মানুষজন লোহার রড এবং ছুরি হাতে নিজেরাই নিজেদের পাড়ায় পাহারা দিচ্ছেন - কেননা পুলিশের কোনো চিহ্ন নেই৷ প্রধানমন্ত্রী মোহামেদ ঘানুচি নিজেই এই পরিস্থিতিকে নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে পূর্ণ নৈরাজ্য বলে বর্ণনা করেছেন৷ শহরবাসীদের প্রতি তাঁর আবেদন, নিজেরাই নিজেদের সম্পত্তি রক্ষা করুন৷ শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী অন্তত টিউনিসের মুখ্য বিমানবন্দরটির দখল নিয়েছে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সাগর সরোওয়ার